ফিল্ম রিভিউ, বাংলা

দ্য টিন ড্রাম

দ্য টিন ড্রাম। জার্মান ভাষায় যা ডি ব্লেকট্রোমেল। নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না এটি নোবেলজয়ী লেখক গুন্টার গ্রাসের উপন্যাসের নাম। হ্যা, এই উপন্যাস অবলম্বনেই একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। সেটিও ১৯৭৯ সালের কথা। পরিচালক ফলকার শ্লোনড্রোফ। ছবিটি সে বছর সেরা বিদেশি চলচ্চিত্র বিভাগে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড এবং কান চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন পাম অ্যাওয়ার্ড জেতে। উপন্যাস বা ছবি যেটাই বলি না কেন কাহিনীটা জানা যাক।
সাল ১৯২৫। জার্মানির সারকা শহর। একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার।আলফ্রেড ম্যাটজারেথ ও অ্যাগনেসম্যাটজারেথ দম্পতির এক ছেলে। নাম অস্কার।এ ইছোট্ট অস্কার তার তৃতীয় জন্ম দিনে একটি সুন্দর ড্রাম উপহার পায়. টিনের ড্রাম। এই ড্রামটিই হয়ে ওঠে অস্কারের সর্বক্ষণের সঙ্গী। দিন নাই রাত নাই যখন খুশি অস্কার সেটি বাজানো শুরু করে। কেউ যে ওর কাছ থেকে সেটি দূরে সরিয়ে রাখবে, সেটি হবার জো নেই। কেঁদে বাড়ি মাথায় তুলবে বললে ভুল হবে, বলা উচিত পাড়া মাথায় তোলে। আর সে চিৎকার এমনই জোরালো যে কানের পর্দা তো ফেটে যাবেই, এমনকি কাচও ভেঙ্গে যায়। ব্যাপারটা বিস্ময়কর হলেও সত্যি। এই অস্কারকে নিয়ে পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ বয়স বাড়ে কিন্তু ছেলেটির দৈহিক আকৃতি তো বাড়েই না, এমনকি মানসিক বৃদ্ধিও ঘটে না। ওই এক ড্রাম পিটানো নিয়েই সারাক্ষণ সে আছে। 

১৯২৫-এ অস্কারের বয়স ছিল তিন। জার্মানি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে যেতে থাকে কিন্তু ছোট্ট অস্কার আর বাড়ে না। এই ছবিটির বিরুদ্ধে তখন চরম অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছিল। চাইল্ড পর্নোগ্রাফির অভিযোগ দিয়ে এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলোহামাতে এবং ক্যানাডায় নিষিদ্ধ করা হয়। ওকলোহামাতে এমনও ঘোষণা করা হয় ছবিটি যদি কোনো হলে প্রদর্শন করা হয় তাহলে হল মালিককে কঠিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আসলে আপত্তিটি উঠেছিল দ্য টিন ড্রাম-র মূল চরিত্র বালক অস্কারকে তাদের বাড়ির গভার্নেস মারিয়ার সঙ্গে খোলামেলা যৌন দৃশ্যে দেখানোর জন্য। যেখানে ছবিতে অস্কারের বয়স ১১ এবং মারিয়ার বয়স ১৬।
এই মারিয়ার সঙ্গে আবার অস্কারের বাবারও যৌন সম্পর্ক রয়েছে। তবে এত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিন্তু নব্বই দশকের সবচে’ ব্যবসা সফল এবং হিট ছবি দ্য টিন ড্রাম । অবশ্য গুন্টার গ্রাসের উপন্যাসের মাত্র দুই-তৃতীয়াংশের চলচ্চিত্রায়ন হয়েছে এখানে। মূলত পাঁচটি চরিত্রকে ঘিরেই এই ছবির কাহিনী। অস্কার, তার বাবা-মা এবং মারিয়া। অস্কার চরিত্রে অভিনয় করেছে মারিয়ো অ্যাডর্ফ, আলফ্রেড ম্যাটজারেথ ও অ্যাগনেস ম্যাটজারেথের চরিত্রে অ্যাঞ্জেলা উইংকলার ও ডেভিড ব্যানেট এবং মারিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ক্যাথারিনা থ্যালব্যাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *