ফিল্ম রিভিউ, বাংলা

ইসরাইলি চলচ্চিত্র বিউফোর্ট

উপন্যাসের নাম ইফ দেয়ার ইজ অ্যা হ্যাভেন। লেখক রন লেশেম। এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র বানানো হয় বিউফোর্ট। পরিচালক জোসেফ সেডার। ২০০৭ সালে হিব্রু ভাষার এই ইসরাইলি ছবিটি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়। বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভলে এটি সিলভার বেয়ার পুরস্কার জেতে। আর খোদ ইসরাইলে এটি চারটি বিভাগে পুরস্কার পায়।

এইবার আসা যাক ছবির কাহিনিতে। ছবিটি মূলত একটি আইডিএফ (ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস) ইউনিট নিয়ে। দুই হাজার সালের ঘটনা। ইসরাইল সীমান্তের দক্ষিণ লেবাননে তখন সংঘর্ষ বা বলা যায় যুদ্ধ চলছে। এই ইউনিটটিকে দক্ষিণ লেবাননের বিউফোর্ট পোস্টে পাঠানো হয়। বিউফোর্ট হলো দক্ষিণ লেবাননে দ্বাদশ শতাব্দীর একটি প্রাসাদ। সেই প্রাসাদ রক্ষাই সৈন্যদের মূল কাজ।

সৈন্যদের প্রতিটি মুহূর্ত হিজবুল্লাহ গেরিলাদের আক্রমণের আতঙ্কে কাটাতে হয়। এই ইউনিটটির সেনা কমান্ডারের নাম লিরাজ লিবরেটি। ২০০০ সালে বিউফোর্ট প্রাসাদ থেকে ইসরাইলি সেনা সরিয়ে আনা হয়। এবং সেখানে লিরাজ লিবরেটিই ছিলেন শেষ কমান্ডার। বিউফোর্ট প্রাসাদে কর্তব্যরত ইসরাইলি সিকিউরিটি জোনের সেনাদের প্রতিটি দিন-রাত কীভাবে কাটত, তাদের অনুভূতি-ভয়-দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-নিঃসঙ্গতা, যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, ফেলে আসা প্রিয়জনের স্মৃতি এসব নিয়েই বিউফোর্ট ছবির কাহিনী বর্ণিত।

দক্ষিণ লেবাননের এই সংঘর্ষ কিন্তু ১-২ বছর চলেনি, দীর্ঘ ১৮টি বছর চলেছে। ছবির পরিচালক জোসেফ সেডার যিনি নিজেও লেবাননের এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ইসারাইলি সেনাবাহিনীতে তিনি বেশ কয়েক বছর চাকরি করেছেন। এককথায় তার অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছেন ছবিটির প্রতিটি পলে পলে। ছবির শুটিংয়ের জন্য পরিচালক অবশ্য বিউফোর্ট প্রাসাদ ব্যবহার করতে পারেননি। এর সদৃশ আরেকটি উত্তর ইসরাইলে অবস্থিত নিমরোদ ফোর্টেস-এ শুটিং করেছেন। পরিচালক বলেন, ছবির বেশিরভাগ দৃশ্যই আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া। কেবল সেগুলোকে স্ক্রিনে আনা হয়েছে। বিউফোর্ট প্রাসাদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ছবিতে বিউফোর্ট প্রাসাদের পাথরের দেয়াল দেখিয়েছি যার মাধ্যমে আমি যুদ্ধের তুচ্ছতা, নিঃসাড়তা বুঝাতে চেয়েছি। সেডার বলেন, ড্যাস বুট, পাথস অব গ্লরি ছবি দুটি তার উপর এতটাই প্রভাব ফেলেছে যে তিনি এ ধরণের ছবি নির্মাণে আগ্রহী হয়েছেন।

ইসরাইলি সরকার বিউফোর্ট ছবি নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে। পরিচালক জোসেফ সেডার এর আগেও দুটি ছবি বানিয়েছেন। তবে বিউফোর্ট-র মতো তা প্রশংসা কুড়াতে পারেননি। ছবিটি বিভিন্ন ফেস্টিভলে যেমন পুরস্কৃত হয়েছে তেমনি ইসরাইলে তো বটেই সারা বিশ্বে ব্যাপক ব্যবসাও করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *